ভারতবর্ষে মোঘল সাম্রাজ্য

ঔরঙ্গজেব

২৬১. কত খ্রিস্টাব্দে ও কোথায় ওরঙ্গজেব জন্মগ্রহণ করেন?
উঃ ১৬১৮ খ্রিস্টাব্দে গুজরাটের দাহোদ নামক স্থানে।

২৬২. ঔরঙ্গজেবের পিতা কে ছিলেন?
উঃ শাহজাহান।

২৬৩. ঔরঙ্গজেবের মাতা কে ছিলেন?
উঃ মুমতাজ মহল।

২৬৪. ঔরঙ্গজেব শাহজাহানের কততম সন্তান ছিলেন?
উঃ তৃতীয়।

২৬৫. প্রথম আলমগীর নামে কে পরিচিত ছিলেন?
উঃ ঔরঙ্গজেব।

২৬৬. ঔরঙ্গজেব কত বছর মুঘল সাম্রাজ্যের শাসক ছিলেন?
উঃ ১৬৫৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত ৪৯ বছর মুঘল সাম্রাজ্যের শাসক ছিলেন। (১৬৫৮-১৭০৭ খ্রিস্টাব্দ)

২৬৭. ঔরঙ্গজেব কততম মুঘল সম্রাট ছিলেন?
উঃ ষষ্ঠ মুঘল সম্রাট।

২৬৮. বাহাদুর আলমগীর, বাদশাহ গাজী নামে পরিচিত কে?
উঃ ঔরঙ্গজেব।

২৬৯. ভারতীয় ইতিহাসে সবচেয়ে বিতর্কিত শাসক হিসেবে কার বর্ণনা আছে?
উঃ ওরঙ্গজেবের।

২৭০. ঔরঙ্গজেবের চার পুত্র কোন কোন স্থানের শাসনকর্তা ছিলেন?
উঃ ঔরঙ্গজেবের প্রিয় পুত্র ছিলেন দারা। তিনি পাঞ্জাব এলাহাবাদ ও মুলতানের শাসনকর্তা ছিলেন। দ্বিতীয় পুত্র সুজা ছিলেন বাংলার শাসনকর্তা। তৃতীয় পুত্র ঔরঙ্গজেব ছিলেন দাক্ষিণাত্যের শাসনকর্তা। কনিষ্ঠ পুত্র মুরাদ ছিলেন গুজরাটের শাসনকর্তা।

২৭১. কত খ্রিস্টাব্দে ওরঙ্গজেবের রাজ্যভিষেক হয়?
উঃ ১৬৫৯ খ্রিস্টাব্দে ( দিল্লি, শালিমার )

২৭২. ঔরঙ্গজেবের শাসন কালকে মোটামুটি কটি পর্যায়ে ভাগ করা যায়?
উঃ ঔরঙ্গজেবের শাসনকালকে দুটি পর্যায়ে ভাগ করা যায় ১৬৫৮-১৬৮১
১৬৮১-১৭০৭ খ্রি:।

২৭৩. ঔরঙ্গজেব কোন কোন রাজ্যগুলি জয় করেছিলেন?
উঃ ঔরঙ্গজেবের নির্দেশে ১৬৬১ খ্রিস্টাব্দে বিহারের শাসনকর্তা দাউদ খাঁ পালামৌ জয় করেন।
১৬৬১ খ্রিস্টাব্দেই বাংলার শাসনকর্তা মীরজুমলা অহম রাজ জয়ধ্বজ সিংহকে বশ্যতা স্বীকারে বাধ্য করে কুচবিহার রাজ্যটি জয় করেন।
মীর জুমলার মৃত্যুর পর বাংলার শাসনকর্তা শায়েস্তা খাঁ, আরাকান রাজ কে পরাজিত করে চট্টগ্রাম ও পর্তুগিজ জলদস্যুদের পরাজিত করে সন্দীপ দখল করেন।

২৭৪. উড়িষ্যায় পাঠানা রা বিদ্রোহ করলে তা দমন করেন কে?
উঃ ঔরঙ্গজেব।

২৭৫. ঔরঙ্গজেবের রাজত্বকালে কোন কোন উপজাতিরা বিদ্রোহ ঘোষণা করে?
উঃ ঔরঙ্গজেবের রাজত্বকালে জাঠ, বুন্দেলা, শিখ, রাজপুত, মারাঠা এবং উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চলের আফগান উপজাতিরা বিদ্রোহ ঘোষণা করে।

২৭৬. জাঠ বিদ্রোহ :– দিল্লি ও মথুরা অঞ্চলে বসবাসকারী জাঠরা ছিল মূলত কৃষিজীবী। তারা সরকারকে উদাহারে কর দিতে আপত্তি জানায়। ১৬৬৯ খ্রিস্টাব্দে স্থানীয় জমিদার গোকলার নেতৃত্বে জাঠ বিদ্রোহের সূচনা হয়। গোকলার পর রাজারাম ও চুড়ামনের নেতৃত্বে জাঠরা বিদ্রোহে অবতীর্ণ হয়। শেষ পর্যন্ত চুড়ামনের নেতৃত্বে জাঠরা ভরতপুরে একটি স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হয়।

২৭৭. সৎনামি বিদ্রোহ :– মথুরায় সৎনামি নামে একটি ভক্ত সম্প্রদায় বাস করত। ১৬৫৭ খ্রিস্টাব্দে এই ধর্মীয় সম্প্রদায়টি প্রতিষ্ঠিত হয়।
ছোটখাটো ব্যবসা ও কৃষিকার্যের মধ্যে দিয়ে তারা জীবন ধারণ করত। ১৬৭২ খ্রিস্টাব্দে সৎনামি বিদ্রোহের সূচনা হয়। এই বিদ্রোহের নেতা ছিলেন গরিবদাস হাডা নামে জনৈক ব্যক্তি।

২৭৮. বুন্দেলা বিদ্রোহ :-বুন্দেলারা ছিল মধ্য ভারতের এক রাজপুত গোষ্ঠী। ঔরঙ্গজেবের ধর্মীয় নীতির প্রতিবাদে তাঁরই রাজত্বকালের সূচনায় বুন্দেলখন্ডের রাজা চম্পৎরায় বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। চম্পৎরায় এর পর তার পুত্র ছত্রশাল ১৬৭১ খ্রিস্টাব্দে পুনরায় বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। ধর্মীয় আন্দোলন হিসেবে শুরু হয়ে এই বিদ্রোহ স্বাধীনতা সংগ্রামের স্তরে উন্নীত হয়।

২৭৯. শিখ বিদ্রোহ :– শিখ সম্প্রদায়ও ওরঙ্গজেবের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে অবতীর্ণ হয়। ঔরঙ্গজেবের রাজত্বকালে শিখ গুরু নির্বাচনে তাঁর হস্তক্ষেপ এবং নবম গুরু তেগবাহাদুর এর প্রাণদণ্ড শিখদের মধ্যে প্রবল বিক্ষোভের সঞ্চার করে। তখন দশম গুরু গোবিন্দ সিংহ শিখদের নিয়ে শক্তিশালী খালসা বাহিনী গঠন করে মুঘলদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা করে তোলেন। যা ঔরঙ্গজেবের পক্ষে দমন করা সম্ভব হয়নি।

২৮০. রাজপুত বিদ্রোহ :- আকবরের রাজত্বকালে রাজপুতরা সাম্রাজ্যের শক্তিশালী স্তম্ভে পরিণত হয়েছিল। কিন্তু ঔরঙ্গজেবের শাসনকালে তাঁর অদূরদর্শী নীতির জন্য রাজপুতদের বিদ্রোহের পথে ঠেলে দেয়। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রক্ষার কাজে নিযুক্ত মাড়োয়ার এর অধিপতি যশবন্ত সিংয়ের মৃত্যু হলে তাঁর পুত্র অজিত সিংহ কে মাড়োয়ার এর অধিপতি হিসেবে স্বীকৃতি দানের জন্য সম্রাটের কাছে অনুরোধ জানান রাজপুতনার রাঠোর বীরগন। ঔরঙ্গজেব তখন অজিত সিংহের ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার শর্ত আরোপ করেন। এতে রাজপুতদের মধ্যে প্রবল বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়। রাঠোর সর্দার দুর্গাদাস এবং মেবারের রানা রাজসিংহ তখন যুগ্মভাবে মুঘলদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করেন। একাদিক্রমে ৩০ বছর যুদ্ধ চালিয়েও ঔরঙ্গজেব রাজপুতদের দমন করতে পারেননি।

২৮১. ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীতি :– ১৬৮১ খ্রিস্টাব্দে সেপ্টেম্বর মাসে ঔরঙ্গজেব সমস্যা সংকুল দাক্ষিণাত্যে যাত্রা করেন। দাক্ষিণাত্যের উদীয়মান মারাঠাদের দমন এবং দাক্ষিণাত্যের গোলকুণ্ডা ও বিজাপুর রাজ্য দুটি জয় করার জন্য ঔরঙ্গজেব তাঁর জীবনের শেষ ২৬ বছর দাক্ষিণাত্যে অতিবাহিত করেন। বলা বাহুল্য, দাক্ষিণাত্যেই তাঁর নিজের ও তাঁর সাম্রাজ্যের সমাধি রচিত হয়।
নিষ্ঠাবান সুন্নি মুসলমান ঔরঙ্গজেব শিয়া রাজ্য দুটি অর্থাৎ বিজাপুর গোলকুন্ডার অস্তিত্ব মেনে নিতে পারেননি। তাই সিংহাসনে বসার পর তিনি মারাঠাদের দমন ও শিয়া রাজ্য দুটিকে জয়ের জন্য জয়সিংহ, দিলীর খাঁ, যশোবন্ত সিং ও শাহজাদা আজমকে দাক্ষিণাত্যে পাঠান।
দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর তিনি ১৬৮৬ খ্রিস্টাব্দে বিজাপুর ও ১৬৮৭ খ্রিস্টাব্দে গোলকুণ্ডা জয় করেন।

২৮২. উত্তরাধিকার দ্বন্দ্বে ঔরঙ্গজেব কিভাবে জয়ী হয়েছিলেন?
উঃ ১৬৫৭ খ্রিস্টাব্দে শাহজাহান গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁর পুত্রদের মধ্যে সিংহাসনের অধিকার নিয়ে এক ভয়ংকর উত্তরাধিকার দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। দারা, সুজা ঔরঙ্গজেব ও মুরাদ– শাহজাহানের এই চার পুত্রের মধ্যে চাতুর্য ও বাস্তব বুদ্ধিতে ঔরঙ্গজেব ছিলেন সবার সেরা। ছলনা ও কূটনীতি এবং রণকুশলতার দ্বারা তিন ভাইকে পরাজিত ও নিহত করে এবং পিতাকে বন্দী করে তিনি মুঘল সিংহাসন দখল করেছিলেন।

২৮৩. মীর জুমলা কে ছিলেন?
উঃ ঔরঙ্গজেবের সময়কালে বাংলার শাসনকর্তা ছিলেন মীর জুমলা। তিনি পারস্য থেকে এসে গোলকুন্ডা তে হীরা ব্যবসায়ী হিসেবে জীবন শুরু করলেও তার কূটনৈতিক ও সামরিক দক্ষতার কারণে তিনি আব্দুল কুতুব শাহের প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হয়েছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি মোঘল পক্ষে যোগদান করেন এবং বাংলার শাসনকর্তা নিযুক্ত হন। ১৬৬১ খ্রিস্টাব্দে তিনি ঔরঙ্গজেবের আদেশে কুচবিহার দখল করেন এবং কুচবিহারের নাম রাখেন আলমগীর নগর। ১৬৬২ খ্রিস্টাব্দে তিনি আসাম দখল করেন এবং ১৬৬৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি মারা যান।

২৮৪. শায়েস্তা খান কে ছিলেন?
উঃ শায়েস্তা খান ছিলেন ঔরঙ্গজেবের মামা। শিবাজীকে দমন করার উদ্দেশ্যে ১৬৬০ খ্রিস্টাব্দে বিশেষ দায়িত্বসহ তাঁকে দাক্ষিণাত্যে পাঠানো হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে তিনি সফলতা লাভ করলেও, শিবাজী হঠাৎ পুনা দুর্গ আক্রমণ করলে তিনি অতি কষ্টে প্রাণ রক্ষা করেন। পরবর্তীকালে তিনি প্রায় ৩০ বছর বাংলা শাসনকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

২৮৫. ঔরঙ্গজেবের ধর্মনীতি :–
উঃ সম্রাট ঔরঙ্গজেব ব্যক্তিগত জীবনে একজন নিষ্ঠাবান সুন্নি মুসলমান ছিলেন এবং শরীয়তের বিধান অনুযায়ী নিজে অতি সংযমী ও অনাড়ম্বর জীবন যাপন করতেন। তিনি নিজেকে ধর্মযোদ্ধা বা গাজী বলে অভিহিত করেন। তাঁর নিজ ধর্মের প্রতি নিষ্ঠা থেকে সমকালীন সুন্নি মুসলিমরা তাকে “জীবন্ত সাধু” বলে মনে করতেন। তাঁর একমাত্র ব্রত ছিল “দার-উল-হারব” অর্থাৎ অ-মুসলমানের দেশকে “দার-উল-ইসলাম” বা মুসলমানের দেশে পরিণত করা। তিনি এমন এক রাষ্ট্র স্থাপন করতে চেয়েছিলেন যার মূল মন্ত্র হবে কোরান ও মহম্মদ।

২৮৬. ইসলাম বিরোধী কোন কোন প্রথাগুলি তিনি রদ করেছিলেন?
উঃ কোরান ও শরীয়ত বিরোধী বলে তিনি দরবারে পারসিক “নওরোজ” বা বসন্ত উৎসব, জন্মদিনে সম্রাটকে সোনা রুপা দিয়ে ওজন করা, ঝারোকা দর্শন ও নৃত্য গীত বন্ধ করেন।
এছাড়া মদ্যপান, গাঁজা-ভাঙের ব্যবহার, জুয়াখেলা, পীরের দরগায় বাতি দেওয়া ও মহরমের শোভাযাত্রা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ হয়। নর্তকী ও গণিকাদের তিনি দিল্লি থেকে বহিস্কৃত করেন।

২৮৭. ঔরঙ্গজেব হিন্দুদের প্রতি কোন কোন নীতিগুলি গ্রহণ করেছিলেন?
উঃ তিনি হিন্দুদের হোলি, দেওয়ালি ধর্মমেলা, যাত্রা, সতীদাহ প্রথা প্রভৃতি বন্ধ করে দেন।
রাজপুত ছাড়া অপর হিন্দুদের পালকি চড়া, অশ্বারোহন ও অস্ত্রবহন নিষিদ্ধ করেন।
মন্দিরের ক্ষেত্রে তিনি অসংখ্য হিন্দু মন্দির নির্মাণ নিষিদ্ধ করেন এবং অসংখ্য মন্দির ধ্বংস করেন। কাশীর বিশ্বনাথ মন্দির, গুজরাটের সোমনাথ মন্দির, মথুরার কেশব দেবের মন্দির, বৃন্দাবনে গোবিন্দ জিউর মন্দির তিনি ধ্বংস করেন।
হিন্দুদের উপর তিনি জিজিয়া কর পুনঃপ্রবর্তন করেন। হিন্দু বণিকদের পণ্যের উপর পাঁচ শতাংশ শুল্ক ধার্য করেন।
তিনি এক নির্দেশ জারি করে হিন্দু কেরানী, পেশকার, কানুনগো প্রভৃতিদের চাকরি থেকে বহিষ্কৃত করে ওই সকল পদে মুসলিমদের নিয়োগ করেন।

২৮৮. ঔরঙ্গজেব কে কোথায় সমাধিস্থ করা হয়?
উঃ দৌলতাবাদে।

২৮৯. গোলকুন্ডা(১৬৮৭) ও বিজাপুর অভিযান(১৬৮৬) কোন মুঘল সম্রাটের সাথে যুক্ত?
উঃ ঔরঙ্গজেব।

২৯০. ঔরঙ্গজেব কোথায় বাদশাহী মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন?
উঃ লাহোরে।

২৯১. ঔরঙ্গজেব কোরান নির্দিষ্ট পথে জীবনযাত্রা পরিচালিত হচ্ছে কিনা তা লক্ষ্য করার জন্য কোন কর্মচারী নিযুক্ত করেছিলেন?
উঃ মুহতাসিব।

২৯২. কোন মোগল সম্রাট ভারতবর্ষকে ইসলাম দীক্ষিত রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিলেন?
উঃ ঔরঙ্গজেব।

২৯৩. সমুগরের যুদ্ধ কবে কাদের মধ্যে হয়েছিল?
উঃ ১৬৫৮ খ্রিস্টাব্দে ঔরঙ্গজেব ও দারা – র মধ্যে।

২৯৪. ঔরঙ্গজেব কোথায় মোতি মসজিদ নির্মাণ করেন?
উঃ দিল্লি।

২৯৫. কোন মুঘল সম্রাটকে দরবেশ সুলতান ও বলা হত?
উঃ ঔরঙ্গজেব কে।

২৯৬. ঔরঙ্গজেব কোন যন্ত্রটি বাজানোয় দক্ষ ছিলেন?
উঃ বীনা।

২৯৭. ঔরঙ্গজেব আলমগীর উপাধি নেন কত খ্রিস্টাব্দে?
উঃ ১৬৫৯ খ্রিস্টাব্দে।

২৯৮. ঔরঙ্গজেব কোন শিখ গুরু কে হত্যা করেছিলেন?
উঃ গুরু তেগবাহাদুর কে।

২৯৯. জিন্দাপীর বা জীবন্ত সাধু কাকে বলা হত?
উঃ ঔরঙ্গজেব কে।

৩০০. কোন ঐতিহাসিক এর উক্তি “দাক্ষিণাত্য ক্ষতই ওরঙ্গজেবের পতনের মূল কারণ।”…
উঃ যদুনাথ সরকার।

৩০১. ঔরঙ্গজেব কোন কর দুটি পুনরায় প্রবর্তন করেছিলেন?
উঃ কলেমা ও জিজিয়া কর।

৩০২. ঔরঙ্গজেব কোন ধর্মাবলম্বী ছিলেন?
উঃ তিনি ছিলেন সুন্নি ধর্মাবলম্বী।

৩০৩. ঔরঙ্গজেবের বিশ্বস্ত কর্মচারী আদ-উন-নবি খান মথুরা নগরীর কি নামকরণ করেন?
উঃ ইসলামবাদ।

৩০৪. জাঠ রা কার নেতৃত্বে বিদ্রোহ করেছিলেন?
উঃ গোকলা।

৩০৫. ঔরঙ্গজেব তাঁর কোন রাজপুত সেনাপতিকে সন্দেহের বসে হত্যা করেছিলেন?
উঃ জয়সিংহ কে।

৩০৬. ঔরঙ্গজেব শিবাজী কে কোথায় নজর বন্দি করে রাখেন?
উঃ আগ্রা দুর্গে ১৬৬৬ খ্রিস্টাব্দে।

৩০৭. ঔরঙ্গজেবের তত্ত্বাবধানে রচিত আইন গ্রন্থটির নাম কি?
উঃ ফতোয়ারে আলমগিরি।

৩০৮. ঔরঙ্গজেব কত খ্রিস্টাব্দে তাঞ্জোর ও ত্রিচিনোপল্লী হিন্দু রাজ্য দুটি জয় করেন?
উঃ ১৬৯৭ খ্রিস্টাব্দে।

৩০৯. কত খ্রিস্টাব্দে ও কাদের মধ্যে পুরন্দরের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়েছিল?
উঃ ১৬৬৫ খ্রিস্টাব্দে শিবাজী ও মুঘল সেনাপতি জয় সিং এর মধ্যে পুরন্দরের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়।

৩১০. পুরন্দরের সন্ধির শর্ত গুলি কি ছিল?
উঃ ক) শিবাজী মুঘল সার্বভৌম স্বীকার করেন।
খ) ২৩ টি দুর্গ ও কয়েকটি জেলা শিবাজী মোঘলদের ছেড়ে দেন।
গ) শিবাজীর পুত্র শম্ভুজি মুঘল দরবারে ৫ হাজারি মনসবদার নিযুক্ত হন।
ঘ) শিবাজী বিজাপুরের বিরুদ্ধে মুঘলদের সাহায্যদানের সম্মত হন।

৩১১. ঔরঙ্গজেব কাকে “রাজা” বলে স্বীকার করে নেন?
উঃ শিবাজী কে।

৩১২. জায়গীর হিসেবে কোন স্থানটি ঔরঙ্গজেব শিবাজী কে দান করেন?
উঃ বেরার।

৩১৩. তিনি মুসলমানদের উপর কোন কর পুনঃ প্রবর্তন করেন?
উঃ যাকাৎ কর।

৩১৪. চাষীদের সুবিধার জন্য তিনি কত প্রকার কর প্রত্যাহিত করেন?
উঃ ৮০ প্রকার কর।

৩১৫. কোন প্রথা দুটিকে ঔরঙ্গজেব নির্দিষ্ট ভাবে বিধিবদ্ধ করে মনসবদারদের জন্য বাধ্যতামূলক করেন?
উঃ দাগ ও হুলিয়া প্রথা।

৩১৬. কার সহযোগিতায় ঔরঙ্গজেব ফতোয়া-ই-আলমগীরী সংকলন করেন?
উঃ শেখ নিজামী নামে জনৈক পন্ডিত।

৩১৭. ফতোয়া-ই-আলমগীরী কোন ভাষায় রচিত?
উঃ ফারসি ভাষায়।

৩১৮. কোন মুঘল সম্রাট হিন্দু সমাজের সতী প্রথা কে নিষিদ্ধ করেন?
উঃ ঔরঙ্গজেব।

৩১৯. ঔরঙ্গজেব জিম্মি বা দ্বিতীয় শ্রেণীর বিধর্মী নাগরিক হিসেবে কাদের গণ্য করতেন?
উঃ হিন্দুদের।

৩২০. সেকেন্দ্রায় আকবরের স্মৃতিসৌধের চিত্রগুলি কে বিনষ্ট করেন?
উঃ ঔরঙ্গজেব।

৩২১. কোন সম্রাটের রাজত্বকাল থেকে মুসলিম স্থাপত্য শিল্পের পতনের সূত্রপাত শুরু হয়?
উঃ ঔরঙ্গজেবের সময় থেকে।

৩২২. ঔরঙ্গজেবের আমলে কোন কোন ঐতিহাসিক গ্রন্থ গুলি রচনা করা হয়েছিল?
উঃ কাফি খাঁ রচিত মুন্তাখাব-উল-লুবাব
মির্জা মহম্মদ কাজিম রচিত আলমগিরিনামা
মহম্মদ সাকি রচিত মাসির-ই-আলমগীরি
ঈশ্বর দাসের ফুতুহাৎ-ই-আলমগীরি
ভীমসেন রচিত নুসকা-ই-দিলখুসা

৩২৩. ঔরঙ্গজেবের রাজত্বকালে কোন ফারসি চিকিৎসক ভারতে আসেন?
উঃ ফ্রাঁসোয়া বার্নিয়ে।

৩২৪. ঔরঙ্গজেবের বিরুদ্ধে আফ্রিদি ও ইউসুফ উপজাতি কার নেতৃত্বে বিদ্রোহ শুরু করেছিল?
উঃ আকমল খান এর নেতৃত্বে আফ্রিদি উপজাতি ১৬৭২ খ্রিস্টাব্দে ও ভাগুর নেতৃত্বে উত্তর-পশ্চিম সীমান্তের ইউসুফ উপজাতি ঔরঙ্গজেবের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল ১৬৬৭ খ্রিস্টাব্দে।

৩২৫. পরাজিত বিজাপুর রাজ সিকান্দার সাহ ও গোলকুন্ডা রাজ আবুল হাসানকে ঔরঙ্গজেব কোন দুর্গে বন্দী করে রেখেছিলেন?
উঃ দৌলতাবাদ দুর্গে।

৩২৬. কাকে পরাজিত করে ঔরঙ্গজেব চিতোর দুর্গ অধিকার করেন?
উঃ রানা জয় সিংহকে (১৬৮৯ খ্রিস্টাব্দে)।

৩২৭. ঔরঙ্গজেব মেবারের রানা হিসেবে কাকে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন?
উঃ জয় সিংহকে। (১৬৮১ খ্রি:)

৩২৮. ঔরঙ্গজেব কোন রাজপুত রাজ্য নিজ সাম্রাজ্যভুক্ত করেছিলেন?
উঃ মারোয়াড় বা যোধপুর রাজ্য (১৬৭৯ খ্রিস্টাব্দে)

৩২৯. আলমগীর কথার অর্থ কি?
উঃ বিশ্বজয়ী।

৩৩০. ঔরঙ্গজেবের কোন সেনাপতি অহোম ও কোচ রাজ্য অধিকার করেন?
উঃ শায়েস্তা খাঁ।

৩৩১. ঔরঙ্গজেব তার কোন দুই ভাইকে হত্যা করেন?
উঃ মুরাদ ও দারাশিকো কে ।

৩৩২. ধর্মাটের যুদ্ধ কবে কাদের মধ্যে হয়েছিল?
উঃ ধর্মাটের যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল ১৬৫৮ খ্রিস্টাব্দে ঔরঙ্গজেব ও মুরাদের সঙ্গে দারার সেনাপতি যশবন্ত সিংহের। এই যুদ্ধে যশবন্ত সিংহ পরাজিত হয়।

৩৩৩. সামুগরের যুদ্ধ কবে কাদের মধ্যে হয়েছিল?
উঃ দারা এবং ঔরঙ্গজেব ও মুরাদের মধ্যে ১৬৫৮ খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত হয় সামুগরের যুদ্ধ। এই যুদ্ধের দারা পরাজিত হয়।

৩৩৪. ঔরঙ্গজেব মুরাদকে কোন দুর্গে বন্দী করেন?
উঃ গোয়ালিয়ার দুর্গে।

৩৩৫. কে কোথায় বিবি কা মকবারা নির্মাণ করেন?
উঃ ঔরঙ্গজেব, ঔরঙ্গাবাদে বিবি কা মকবারা নির্মাণ করেন।

৩৩৬. ১৭০৫ সালে গুরু গোবিন্দ সিং সম্রাট আওরঙ্গজেব কে একটি চিঠি প্রেরণ করেছিলেন তার নাম কি? ও এই চিঠিতে কোন বিষয়ের উপর আলোকপাত করা হয়েছিল?
উঃ চিঠিটির নাম ছিল জাফরনামা।
এই চিঠিতে ঔরঙ্গজেবের নিষ্ঠুরতা ও কিভাবে তিনি ইসলামের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন তার প্রতি আলোকপাত করা হয়েছিল।

৩৩৭. আওরঙ্গজেব হিন্দুদের ধর্মীয় নগরী বেনারসের নাম পাল্টে কি রেখেছিলেন?
উঃ মুহাম্মদাবাদ।

৩৩৮. কোন কোন হিন্দু মন্দির ধ্বংস করে তিনি সেখানে মসজিদ স্থাপন করেছিলেন?
উঃ কাশী বিশ্বনাথ মন্দির, কেশব দেও মন্দির ও সোমনাথ মন্দির।

৩৩৯. ঔরঙ্গজেব কাকে কাকে মৃত্যুদন্ডে দণ্ডিত করেন?
উঃ ঔরঙ্গজেব নিজে ভ্রাতা শাহজাদা দারাশিকোকে মৃত্যুদন্ডে দণ্ডিত করেন। ১৬৮৯ খ্রিস্টাব্দে মারাঠা রাজা শম্ভুজিকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। ১৬৭৫ খ্রিস্টাব্দে শিখ গুরু তেগ বাহাদুরকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন।

৩৪০. আরাকান অধিকার থেকে চট্টগ্রাম পুনরুদ্ধার করেন কে?
উঃ ১৬৬৬ খ্রিস্টাব্দে শায়েস্তা খাঁ।

৩৪১. ঔরঙ্গজেবের সময় পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি হীরা উৎপাদিত হতো কোথায়?
উঃ গোলকুন্ডা দুর্গের বিখ্যাত হীরার খনি কল্লোড় খনি।

৩৪২. জাফর বক্স কি?
উঃ মুঘলদের গোলন্দাজ বাহিনীর বিখ্যাত কামান।

৩৪৩. আওরঙ্গজেবের কামান গুলির নাম কি?
উঃ বহর আজদাহা পাইকার, ফতেহ রহব ও ইব্রাহিম রওজা।

৩৪৪. মুঘল সেনাবাহিনীর জন্য তলোয়ার কোথা থেকে আমদানি করা হতো?
উঃ ইংল্যান্ড থেকে।

৩৪৫. সেনাবাহিনীতে গোলন্দাজ শাখা আমলে উদ্ভব হয়?
উঃ ওরঙ্গজেবের আমলে।

Sharing Is Caring:

Leave a Comment