নমস্কার বন্ধুরা, বাংলা জিকে বুক ওয়েবসাইটে তোমাদের সবাইকে স্বাগত জানাই।আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়বস্তু হল ভারতের মধ্যযুগের অন্যতম ব্যক্তিত্ব শিবাজী ও মারাঠা সাম্রাজ্য|পশ্চিমবঙ্গ তথা সমগ্র ভারতবর্ষের সমস্ত সরকারি চাকরীর পরীক্ষাতে বা প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষা গুলোতে এই পোস্টটি আপনাদের বিশেষভাবে সাহায্য করবে।
তাই আর দেরি না করে শুরু করা যাক আজকের আলোচনা……
শিবাজীর জন্ম :- ১৬২৭ খ্রিস্টাব্দ (মতান্তরে ১৬৩০ খ্রিস্টাব্দ)
স্থান :- শিবন এর গিরিদূর্গ
পিতা :- শাহজি ভোঁসলে
মাতা :- জিজাবাঈ
দাদাজি :- কোন্ডদেব
ধর্মীয় গুরু :- রামদাস
শিবাজীর স্ত্রী :- শিবাজীর আটজন স্ত্রী ছিলেন। প্রথম স্ত্রীর নাম ছিল সাইবাঈ।
প্রধান সেনাপতি :- তানাজি
শিবাজীর ডান হাতের অস্ত্র :- বিছুয়া
শিবাজীর বাম হাতের অস্ত্র বা তরবারি :- বাঘনখ
শিবাজীর তরবারির নাম :- ভবানী
শিবাজীর ঘোড়ার নাম :- শিবাজীর ৭ টি ঘোড়া ছিল তাদের নামগুলি হল মোতি, বিশ্বাস, কৃষ্ণা, গজরা, তুরঙ্গী, রণবীর ও ইন্দ্রয়ানী
শিবাজীর যুদ্ধ জাহাজের নাম :- গুরাব
হিন্দভো ধর্ম ধারক (protector of Hindusthan) :- শিবাজী
পার্বত্য মুষিক :- শিবাজী
••• শিবাজীর পিতা আহম্মদ নগরের সুলতানের অধীনে পুনার জায়গীদার ছিলেন। পরবর্তীকালে বিজাপুরের সুলতানের অধীনে কর্নাটকে জায়গীর পান।
••• শিবাজী ভোঁসলে বা ছত্রপতি শিবাজী রাজে ভোঁসলে ছিলেন মারাঠা সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা। মায়ের কাছে রামায়ণ ও মহাভারতের কাহিনী শুনে শিশুকালেই শিবাজীর মনে বীরত্ব ও দেশপ্রেমের সঞ্চার হয়েছিল।
••• শিশু শিবাজী মাতা জিজাবাঈ ও দাদাজী কোন্ডদেবের সাথে পুনায় বসবাস করতেন।
••• শিবাজী স্বাধীন মারাঠা সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন যার রাজধানী ছিল রায়গড়ে।
••• ১৬৭৪ খ্রিস্টাব্দে ৬ই জুন শিবাজী “ছত্রপতি” হিসেবে মুকুট ধারন করেন। গুরু রামদাস তাকে এই উপাধি প্রদান করেন।
••• ১৬৪৭ খ্রিস্টাব্দে দাদাজী কোন্ড দেবের মৃত্যুর পর শিবাজীর রাজ্য জয়ে মননিবেশ করেন।
শিবাজীর দূর্গ জয় :– বিজাপুরের অন্তর্গত তোরণা দুর্গটি অধিকার করার পর শিবাজী একে একে রায়গড়, সিংহগড়, বড়মতি, ইন্দ্রপুর পুরন্দর, জাবলি প্রভৃতি স্থানের দূর্গগুলি জয় করেন। ১৬৫৭ খ্রিস্টাব্দে দাক্ষিণাত্যের মুঘল শাসনকর্তা ঔরঙ্গজেব বিজাপুর আক্রমণ করলে শিবাজী সেই সুযোগে আহম্মদনগর ও জুনার লুঠ করেন। ঔরঙ্গজেব দাক্ষিণাত্য ত্যাগ করলে তিনি উত্তর কোঙ্কণের বিস্তীর্ণ স্থান দখল করেন।
••• বিজাপুর সুলতান ১৬৫৯ খ্রিস্টাব্দে আফজল খাঁ এর নেতৃত্বে এক বিরাট সেনাবাহিনী পাঠান শিবাজী কে দমনের উদ্দেশ্যে। শিবাজী কে কৌশলে হত্যার চক্রান্ত করেন আফজাল খাঁ। কিন্তু এই চক্রান্ত ব্যর্থ করে শিবাজী তাঁর “বাঘনখ” দ্বারা আফজাল খাঁ কে হত্যা করেন এবং দক্ষিণ কোঙ্কন ও কোলাপুর জয় করেন। শেষ পর্যন্ত ১৬৬২ খ্রিস্টাব্দে বিজাপুরের সুলতান শিবাজীর সাথে সন্ধি স্থাপনে বাধ্য হন।
••• ১৬৬০ খ্রিস্টাব্দে ঔরঙ্গজেব দাক্ষিণাত্যের শাসনকর্তা শায়েস্তা খাঁ র উপর শিবাজী কে দমনের দায়িত্ব দেন। শায়েস্তা খাঁ এক্ষেত্রে ব্যর্থ হন। ১৬৬৩ খ্রিস্টাব্দে শিবাজী অতর্কিতে শায়েস্তা খাঁর শিবিরে হানা দিয়ে তাঁর পুত্রসহ ৪০ জন অনুগামীকে হত্যা করেন এবং শায়েস্তা খাঁ আহত হয়ে কোনরকমে প্রাণ বাঁচিয়ে দাক্ষিণাত্য ত্যাগ করেন। ১৬৬৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি মুঘলদের সমৃদ্ধশালী বন্দর সুরাট লুণ্ঠন করেন।
পুরন্দরের সন্ধি :– মুঘল সাম্রাজ্যের সেনাপতি ও রাজপুত শাসক প্রথম জয় সিং এবং মারাঠা বীর ছত্রপতি শিবাজীর মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় পুরন্দরের সন্ধি,১৬৬৫ খ্রিস্টাব্দের ১১ই জুন। জয়সিং পুরন্দর দুর্গা অবরোধ করলে শিবাজী বাধ্য হন সন্ধি স্বাক্ষর করতে।
পুরন্দরের সন্ধির শর্ত :– ১) শিবাজী মোগল সার্বভৌমত্ব স্বীকার করেন। ২ ) শিবাজী ২৩ টি দুর্গ ও কয়েকটি জেলা যেখান থেকে বার্ষিক ২০ লক্ষ টাকার রাজস্ব আদায় হয় তা মুঘলদের ছেড়ে দেন। ৩) শিবাজীর পুত্র শম্ভুজী মুঘল দরবারে ৫ হাজারী মনসবদার নিযুক্ত হন। ৪) শিবাজী বিজাপুরের বিরুদ্ধে মোগলদের সাহায্য দানে সম্মত হন।
••• ১৬৬৬ খ্রিস্টাব্দে ঔরঙ্গজেবের আমন্ত্রণে ও জয় সিংহের অনুরোধে শিবাজী শিশু পুত্র শম্ভুজি সহ আগ্রায় যান। দরবারে তাঁকে উপযুক্ত সম্মান না দেওয়ায় তিনি প্রতিবাদ করলে ঔরঙ্গজেব তাঁকে আগ্রা দুর্গে নজরবন্দী করে রাখেন। কিন্তু সূচতুর শিবাজী শিশু পুত্রসহ কৌশলে সেখান থেকে পলায়ন করেন।
••• ঔরঙ্গজেব এই শিবাজী কেই “রাজা” বলে স্বীকার করেন এবং জায়গীর হিসেবে বেরার দান করেন।
••• ১৬৭০ খ্রিস্টাব্দে থেকে শিবাজী পুনরায় মুঘলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেন। পুরন্দরের সন্ধির শর্ত হিসেবে যে ২৩ টি দুর্গ মুঘলদের ছেড়ে দিয়েছিলেন সেগুলি একে একে তিনি পুনরুদ্ধার করেন।